হাদীসের নির্বাচিত দোয়াসমূহ | কুরআন ও হাদীস থেকে নির্বাচিত ৩১ টি দোয়া
হাদীসের নির্বাচিত দোয়াসমূহ
“”শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু”
(১) আল্লাহ, দৃষ্টির অন্তরালবর্তী ও দৃষ্টিগ্রাহ্য সকল বিষয়ে যেন তোমাকে ভয় করতে পারি হে আল্লাহ, যদি জীবন আমার জন্য কল্যাণকর হয়, তাহলে আমাকে জীবিত রাখ, আর যদি মৃত্যু আমার হয় তাহলে আমাকে মৃত্যু দান কর। সেই তাওফিক প্রার্থনা করি। তোমার নিকট প্রার্থনা করি সত্য কথা বলার তাওফিক, খুশি ও ক্রোধ উভয় অবস্থাতেই। তোমার নিকট প্রার্থনা করি মিতব্যয়িতার, -অসচ্ছল উভয়াবস্থায়। করি এমন নেয়ামত যা শেষ হবার নয়। করি যা চক্ষু জুড়াবে অনিঃশেষভাবে। তোমার নিকট চাই তকদিরের প্রতি সন্তুষ্টি। তোমার নিকট চাই মৃত্যুর পর সুখময় জীবন। নিকট কামনা করি তোমাকে দেখার তৃপ্তি, আমি কামনা করি তোমার সহিত সাক্ষাৎ লাভের আগ্রহ-ব্যাকুলতা যা লাভ করলে আমাকে স্পর্শ করবে না কোন অনিষ্ট, আর আমাকে সম্মুখীন হতে হবে না এমন কোন ফেৎনার যা আমাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে। আল্লাহ, তুমি আমাদেরকে ঈমানের অলংকার দ্বারা কর আর আমাদেরকে বানাও পথ প্রদর্শক ও হেদায়েতের [নাসায়ি : ৫৪/৩]
(২) আল্লাহ, তুমি আমার প্রভু তুমি কোন ইলাহ নেই। আমাকে সৃষ্টি করেছ আর আমি হচ্ছি তোমার বান্দা এবং আমি আমার সাধ্য-মত তোমার প্রতিশ্রুতিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ রয়েছি। আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হতে তোমার আশ্রয় ভিক্ষা করি। প্রতি তোমার নিয়ামতের স্বীকৃতি প্রদান করছি, আর আমি আমার গুনাহ-খাতা স্বীকৃতি করছি। তুমি আমাকে মাফ করে দাও নিশ্চয়ই তুমি ভিন্ন আর কেউ গুনাহ মার্জনাকারী নেই। [বোখারি : ৫৮৩১]
(৩) আল্লাহ, আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি পদস্খলন অথবা পদস্খলিত হওয়া থেকে। হারিয়ে ফেলা অথবা অন্য কর্তৃক পথভ্রষ্ট হওয়া থেকে। উপর জুলুম করা থেকে অথবা কারো নির্যাতিত হওয়া থেকে। সাথে মূর্খতা-পূর্ণ আচরণ করা থেকে অথবা অন্যের মূর্খতা-জনিত আচরণে আক্রান্ত হওয়া থেকে। [নাসায়ি : ৫৩৯১]
(৪) আল্লাহ! তোমার নিকট উপকারী বিদ্যা, গ্রহণযোগ্য আমল এবং পবিত্র জীবিকা প্রার্থনা করি।[ইবনে মাজা : ৯১৫]
(৫) আল্লাহ! জিকির, তোমার শুকরিয়া জ্ঞাপন করার এবং সঠিক ও সুন্দরভাবে সম্পাদন করার কাজে আমাকে সহায়তা কর। [হাকিম : ৪৯৯/১]
(৬) ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মা’বুদ নেই। এক তাঁর কোন শরিক নেই। তাঁরই এবং প্রশংসা মাত্রই তাঁর। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ! প্রদান কর তা বাধা দেয়ার কেহই, আর তুমি যা দেবে না তা দেয়ার মত কেহ নেই। গজব হতে কোন বিত্তশালী বা পদমর্যাদার অধিকারীকে তার ধন-সম্পদ বা পদমর্যাদা রক্ষা করতে পারে না।[বোখারি : ৭৯৯]
(৭) আল্লাহ! আশ্রয় চাচ্ছি কৃপণতা থেকে এবং আশ্রয় চাচ্ছি কাপুরুষতা থেকে। আশ্রয় চাচ্ছি বার্ধক্যের চরম পর্যায় থেকে। ফিতনা-ফাসাদ ও কবরের আজাব হতে। [বোখারি : ৫৮৮৮]
(৮) আল্লাহ, আমি আমার নিজের উপর অনেক করেছি আর তুমি ছাড়া গুনাহ্সমূহ কেহই মাফ পারে তুমি তোমার নিজ গুনে মার্জনা করে দাও এবং আমার প্রতি তুমি রহম কর। তুমি তো মার্জনাকারী ও দয়ালু। [বোখারি : ৫৮৫১]
(৯) আল্লাহ! অন্তরে তাকওয়া প্রদান কর, তাকে পবিত্র কর। তার উত্তম পবিত্রকারী, অভিভাবক ও মনিব। [মুসলিম : ২০৮৮/৪]
(১০) আল্লাহ! তোমার নিকট দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা কামনা করছি। আল্লাহ! নিকট আমার দ্বীন ও দুনিয়া, পরিবার ও সম্পদ বিষয়ে ক্ষমা ও নিরাপত্তা কামনা করছি। আল্লাহ! গোপন ব্যাপারগুলো আচ্ছাদিত করে রাখো। -ভীতি থেকে আমাকে নিরাপত্তা দাও। আল্লাহ! নিরাপদে রাখ, আমার সম্মুখের বিপদ হতে, পশ্চাতের বিপদ হতে, ডানের বিপদ হতে, বিপদ হতে আর ঊর্ধ্ব দেশের গজব হতে। মহত্ত্বের দোহাই দিয়ে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি আমার নিম্নদেশ হতে আগত বিপদে আকস্মিক মৃত্যু হতে। [আবু দাউদ : ৪৪১২]
(১১) আল্লাহ! আমাদের নিকট সুপ্রিয় করে দাও, তা আমাদের অন্তরে সুশোভিত করে দাও। , অবাধ্যতা ও পাপাচারকে আমাদের অন্তরে ঘৃণিত করে, আর আমাদেরকে হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে নাও। আল্লাহ! আমাদেরকে মুসলমান হিসেবে মৃত্যু দাও। আমাদের মুসলমান হিসেবে বাঁচিয়ে রাখ। ও বিপর্যস্ত না করে আমাদেরকে সৎকর্মশীলদের সাথে সম্পৃক্ত কর। [আহমদ : ১৪৯৪৫]
(১২) আল্লাহ! তোমারই রহমতের আকাঙ্ক্ষী আমি। এক পলের জন্যও তুমি আমাকে আমার নিজের আমার নিজের উপর ছেড়ে দিয়ো না। আমার সমস্ত বিষয় সুন্দর করে দাও। ভিন্ন প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই। [আবু দাউদ : ৪৪২৬]
(১৩) ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বুদ, যিনি সহনশীল, মহীয়ান। ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই, যিনি সুমহান আরশের প্রতিপালক। ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই। আকাশমণ্ডলীর প্রতিপালক, জমিনের প্রতিপালক এবং সুমহান আরশের প্রতিপালক।[আহমদ : ৩২৮৬]
(১৪) আল্লাহ! প্রথম, পূর্বে কিছু নেই। সর্বশেষ, পরে কিছু নেই। প্রকাশ্য, উপরে কিছুই নেই। অপ্রকাশ্য, চেয়ে নেই; আমার ঋণ পরিশোধ করে দাও, দারিদ্র্যমুক্ত করে সম্পদশালী বানাও। [মুসলিম : ৪৮৮৮]
(১৫) আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য। আকাশমণ্ডলী-পৃথিবী ও এর মধ্যকার কিছুর নূর। সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্যই। আকাশমণ্ডলী-পৃথিবী ও এর মধ্যকার কিছুর রক্ষক। প্রশংসা তোমার, তুমি আকাশমণ্ডলী-পৃথিবী ও এর মধ্যকার সকল কিছুর প্রতিপালক। সত্য, তোমার প্রতিশ্রুতি সত্য। তোমার বাণী সত্য। তোমার দর্শন লাভ সত্য। সত্য। সত্য। সত্য। সাল্লাল্লাহু’আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্য। সত্য।[বোখারি : ৫৮৪২]
(১৬) আল্লাহ! তোমার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম। তোমার উপর ভরসা করলাম। তোমার প্রতি ঈমান আনলাম। তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন করলাম। কেন্দ্র করে বিবাদে লিপ্ত হলাম। নিকট বিচার ফয়সালা সোপর্দ করলাম। ক্ষমা কর, যা আগে করেছি যা পরে করব, যা প্রকাশ্যে করেছি এবং যা গোপনে করেছি। আমার মা’বুদ। ব্যতীত সত্যিকার কোন মা’বুদ নেই।[বোখারি : ৫৮৪৩]
(১৭) আল্লাহ! তোমার হারাম বস্তু হতে বাঁচিয়ে তোমার হালাল বস্তু দিয়ে আমার প্রয়োজন মিটিয়ে দাও। তোমার অনুগ্রহ দ্বারা সমৃদ্ধ করে তুমি ভিন্ন অন্য সবার থেকে আমাকে অমুখাপেক্ষী করে দাও।[তিরমিজি : ৩৪৮৬]
(১৮) আল্লাহ! আশ্রয় চাচ্ছি জাহান্নামের আজাব হতে, আজাব হতে, দজ্জালের হতে এবং জীবন মৃত্যুর ফেনা হতে। [মুসলিম : ৯৩০]
(১৯) আল্লাহ! তোমার কাছে প্রার্থনা করছি, আমি সাক্ষ্য দিই যে- তুমিই আল্লাহ। তুমি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। তুমি একক অদ্বিতীয়। সকল কিছুই যার মুখাপেক্ষী। জন্ম দেন নাই এবং জন্ম নেন নাই এবং যার সমকক্ষ কেউ নেই।[তিরমিযি : ৩৩৯৭]
(২০) আল্লাহ! আশ্রয় প্রার্থনা করছি বিপদের কষ্ট, নিয়তির অমঙ্গল, দুর্ভাগ্যের স্পর্শ ও বিপদে শক্রর উপহাস হতে। [বোখারি : ৫৮৭১]
(২১) আল্লাহ! সকল বিরোধ, মুনাফেকি এবং বদ চরিত্র তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। [বোখারি : ৫৩৭৬]
(২২) আল্লাহ! গুনাহ মাফ করে দাও ছোট গুনাহ, বড় গুনাহ, প্রকাশ্য ও গোপন গুনাহ, আগের গুনাহ, পরের গুনাহ। [মুসলিম : ৭৪৫]
(২৩) আল্লাহ! যাদেরকে হেদায়েত করেছ, তাদের অন্তর্ভুক্ত কর। যাদেরকে নিরাপদ রেখেছ আমাকে তাদের দলভুক্ত কর। যাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ, আমাকে তাদের দলভুক্ত করো। আমাকে যা দিয়েছ তাতে বরকত দাও। যে অমঙ্গল নির্দিষ্ট করেছ তা হতে আমাকে রক্ষা করো। তুমিই তো ভাগ্য নির্ধারণ কর। উপরে তো কেউ ভাগ্য নির্ধারণ করার নেই। অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ, সে কোন দিন অপমানিত হবে না এবং তুমি যার সাথে শত্রুতা করেছ, সে কখনো সম্মানিত হতে পারে না। আমাদের প্রভু! তুমি বরকতপূর্ণ ও সুমহান। [তিরমিযি : ৪২৬]
(২৪) আল্লাহ! তোমার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম। তোমার প্রতি ঈমান আনলাম। তোমার উপর ভরসা করলাম। তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন করলাম। তোমার উদ্দেশ্যে বিবাদে লিপ্ত হলাম। নিকট বিচার ফয়সালার ভার সোপর্দ করলাম। আমাকে ক্ষমা কর, যা আগে করেছি ও পরে করব, যা প্রকাশ্যে করেছি ও যা গোপনে করেছি। যে বিষয়ে আমার থেকেও তুমি অধিক অবহিত আছ। আমার মা’বুদ তুমি ব্যতীত প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই। [বোখারি : ৫৮৪২]
(২৫) আল্লাহ! তুমি আমার অন্তর আলোকময় কর। আমার কর্ণ আলোকময় কর। আমার চোখ জ্যোতির্ময় কর। আমার সম্মুখ আলোকময় কর। আমার পশ্চাৎ আলোকময় কর। ডানে, বামে, সামনে, পিছনে জ্যোতি ছড়িয়ে দাও। নূরকে তুমি বৃহদাকার করে দাও। হে বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক। [মুসলিম : ১২৭৯]
(২৬) আল্লাহ! রহমতের আকাঙ্ক্ষী আমি, সুতরাং তুমি এক পলক পরিমাণ সময়ের জন্যও আমাকে আমার নিজের উপর ছেড়ে দিয়ো না। আমার সমস্ত বিষয় সুন্দর করে দাও। ভিন্ন প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই। [আবু দাউদ : ৪৪২৬]
(২৭) আল্লাহ! তোমার বান্দা, তোমারই এক বান্দার পুত্র তোমার এক বান্দির পুত্র। আমার ভাগ্য তোমারই হাতে। আমার উপর তোমার নির্দেশ কার্যকর। আমার প্রতি তোমার ফয়সালা ইনসাফপূর্ণ। সমস্ত নামের প্রত্যেকটির বদৌলতে, যে নাম তুমি নিজের জন্য নিজে রেখেছ, অথবা তোমার যে নাম তুমি তোমার কিতাবে নাজিল করেছ, অথবা তোমার সৃষ্ট জীবের মধ্যে কাউকে যে নাম শিখিয়েছ, অথবা স্বীয় ইলমের ভাণ্ডারে নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছ, তোমার নিকট এই কাতর প্রার্থনা -তুমি কুরআন মাজিদকে আমার হৃদয়ের প্রশান্তি, বক্ষের জ্যোতি, আমার চিন্তা-ভাবনার অপসারণকারী এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বিদূরণকারীতে পরিণত কর। [আহমদ : ৩৫২৮]
(২৮) অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী! দ্বীনের উপর আমার অন্তরকে অবিচল রাখ। [তিরমিযি : ৩৪৪৪]
(২৯) আল্লাহ! তোমার কাছে, আগত ও অনাগত বিষয়গুলো; আমি জানতে পেরেছি এবং যা আমি
পারিনি। তোমার আশ্রয় কামনা করছি সকল প্রকার হতে, অনিষ্টের আগত ও অনাগত সকল বিষয় হতে, যা আমি জানতে পেরেছি যা আমি জানতে [ইবনে মাজা : ৩৮৩৬]
(৩০) আল্লাহ! আশ্রয় কামনা করছি অসার জ্ঞান হতে, অশ্রুত দো’আ হতে, এবং এমন প্রবৃত্তি হতে যা পরিতৃপ্ত হয় না, এমন অন্তর হতে যা বিগলিত হয় না। [মুসলিম : ৪৮৯৯]
(৩১) আল্লাহ! সকল ঘৃণিত স্বভাব, অবাঞ্ছিত আচরণ, কুপ্রবৃত্তির তাড়না ও রোগ-ব্যাধি হতে দূরে রাখ। [তিরমিযি : ৩৫১৫]